রাজধানীর কাকরাইলে গত ২৯ আগস্ট সন্ধ্যায় জাতীয় পার্টি ও গণ অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। গণ অধিকার পরিষদের অভিযোগ, জাপা কর্মীরা তাদের মিছিলে হামলা করেছে। অন্যদিকে জাপার দাবি, গণ অধিকার পরিষদের কর্মীরা তাদের ওপর চড়াও হয়েছে। সংঘর্ষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এরই প্রেক্ষিতে গত ৩০ আগস্ট, “এই মুহূর্তে রাজধানীতে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নূরুল হক নূরের উপর হামলার প্রতিবাদে ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে হামলা করেছে গণ অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। মব সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি প্রশাসন।” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের (ডিএমপি) কমিশনারের কার্যালয়ে হামলার কোনো ঘটনা ঘটেনি। বরং, ২০২৩ সালে বিএনপির সমাবেশের পর প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার পুরোনো ভিডিওকে এই দাবি ঘিরে প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির কিছু কী-ফ্রেম রিভার্স সার্চ করে “MD Faruk” নামক ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির ১০ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট ১৫ সেকেন্ড অংশের মিল রয়েছে।

উক্ত পোস্টে দাবি করা হয়, এটি প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ভিডিও।
উল্লিখিত সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘ডিএমপি নিউজ’ এর ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর “বিএনপির কর্মসূচির নামে রাজধানীতে ব্যাপক ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ; পুলিশ সদস্য নিহত” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
এই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার রাজধানীর নয়া পল্টনের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপিকে বেশকিছু শর্তসাপেক্ষে সমাবেশ করার অনুমতি দেন। সমাবেশে আসা বিএনপির উশৃঙ্খল নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন স্থানে লাঠি, চাপাতি দিয়ে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এছাড়াও বেশ কিছু ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাসহ অনেক পুলিশ সদস্য আহত হন। এক পর্যায়ে তারা প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ঢুকে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। একই সময়ে জাজেস টাওয়ারে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
সেসময় এ বিষয়ে একাধিক গণমাধ্যমে ওই গঠনার আরও ভিডিও (১,২,৩) খুঁজে পাওয়া যায়।
সুতরাং, ২০২৩ সালে বিএনপির সমাবেশ পরবর্তীতে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনার দৃশ্যকে সাম্প্রতিক সময়ে নুরুল হক নুরের ওপর হামলার প্রতিবাদে ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে হামলার ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- MD Faruk – Facebook Post
 - ডিএমপি নিউজ – বিএনপির কর্মসূচির নামে রাজধানীতে ব্যাপক ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ; পুলিশ সদস্য নিহত
 


                                    


