দাম্পত্য কলহে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পুরোনো ঘটনাকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার 

অন্তত গত ০৮ আগস্ট থেকে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, “আজ সকালে নোয়াখালীর সেনবাগ থানার মইশাই গ্রামের পাল বাড়ি দুলাল পালের মেয়েকে প্রকাশ্যে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাচ্ছে ৭/৮ জন যুবক।”

উক্ত দাবির ফেসবুক ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে। 

এই দাবির ভিডিওগুলো অন্তত ১ মিলিয়ন বার দেখা হয়েছে। 

একই দাবির ইনস্টাগ্রাম ভিডিও দেখুন এখানে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং এই ঘটনার সাথে সাম্প্রদায়িকতারও সম্পর্ক নাই। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৪ সালের আগস্টের এই ঘটনাটি দাম্পত্য কলহের জেরে ঘটেছিল। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে কিওয়ার্ড সার্চ করে ২০২৪ সালের ০৮ আগস্টও একই ভিডিওর খোঁজ পাওয়া যায়। ভিডিওর ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ০৮ আগষ্ট বিকেলে নোয়াখালীর সেনবাগ থানার মইশাই গ্রামের পাল বাড়ি দুলাল পালের মেয়েকে জোরপূর্বক  তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল ৭/৮ জন যুবক। পরবর্তীতে এলাকাবাসী ও সেনাবাহিনী গাড়িসহ ৩ জনকে আটকে মেয়েকে উদ্ধার করে। বাকিরা পালিয়ে যায়। মেয়েটার বিয়ে হয়েছিল। আর যে তুলে নিয়ে যেতে এসেছিল, সে মেয়েটার প্রাক্তন স্বামী। এর আগেও সে দুইবার তুলে নেয়ার চেষ্টা করছিল।

এর সূত্র ধরে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর একটি প্রতিবেদনের সন্ধান পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদনেও একই ভিডিও থেকে নেওয়া একটি স্ক্রিনশট যুক্ত ছিল। 

Comparison: Rumor Scanner 

প্রতিবেদনে বলা হয়, সে সময় এই ঘটনার ভিডিও দেখে কেউ কেউ এটিকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বলে উল্লেখ করছেন। অবশ্য ওই নারীর বাবা ও গ্রামবাসী জানিয়েছেন, ঘটনাটি সত্য। তবে সেটা সাম্প্রদায়িক হামলা বা সহিংসতার ঘটনা ছিল না। ওই নারীকে অপহরণের চেষ্টা করেছিলেন তাঁর স্বামী। তবে তিনি তা পারেননি।

রিউমর স্ক্যানারের ইনভেস্টিগেশন ইউনিটের এক প্রতিবেদনেও গত বছর এই ভিডিওর বিষয়ে উল্লেখ ছিল। প্রতিবেদনে এই ঘটনার বিষয়ে জানানো হয়, এটি সাম্প্রদায়িক কোনো ঘটনার ভিডিও নয়। বরং পারিবারিক কলহের ঘটনার জেরে এমন কান্ড করে বসেন উক্ত নারীর স্বামী। 

প্রথম আলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, দাম্পত্য বিরোধের জেরে স্বামীর ঘর থেকে বাবার বাড়িতে চলে এসেছিলেন ওই নারী। তাঁকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন তাঁর স্বামীসহ কয়েকজন ব্যক্তি। তখন ওই নারীর চিৎকার শুনে গ্রামবাসী এগিয়ে আসেন। তাঁরা মাইক্রোবাসটি ভাঙচুর করেন। এ সময় ওই নারীর স্বামীসহ তিনজনকে তাঁরা আটক করেন। আটক ব্যক্তিদের সেনাবাহিনীর কাছে সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানায় গ্রামবাসী।

সুতরাং, দাম্পত্য কলহকে ঘিরে সংঘটিত এক বছর পুরোনো ঘটনার ভিডিও সাম্প্রতিক সময়ের দাবিতে প্রচার হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র 

আরও পড়ুন

spot_img