শেখ হাসিনা ভারতে এমপি হতে পারবেন বলে মন্তব্য করেননি রাহুল গান্ধী

ভারতের রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি ও লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী ‘শেখ হাসিনা এখন ভারতের এমপি হতে পারবেন’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ফটোকার্ড দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, রাহুল গান্ধী বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে আলোচিত মন্তব্যটি করেননি। প্রকৃতপক্ষে, শেখ হাসিনার বিষয়ে রাহুল গান্ধীর বার্তা নিয়ে আওয়াজ তুলুন নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার টিম ফটোকার্ডটিতে ‘আওয়াজ তুলুন’ নামের একটি ফেসবুক পেজের নাম দেখতে পায়। তবে ফটোকার্ডটি এটি প্রকাশের কোনো তারিখ লক্ষ্য করা যায়নি। পরবর্তীতে প্রাপ্ত ফেসবুক পেজের নামের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে আওয়াজ তুলুন নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ৫ জুলাই শেখ হাসিনার বিষয়ে একি বার্তা দিলেন রাহুল গান্ধী শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়।

ফটোকার্ডটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডের শিরোনাম ব্যতীত বাকি সকল উপাদানের হুবহু মিল রয়েছে। এছাড়াও ‘আওয়াজ তুলুন’ নামক পেজটিকে প্রচারিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ফন্টের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডের ফন্টের পার্থক্যও লক্ষ্য করা যায়। যা থেকে স্পষ্টত বোঝা যায় যে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ফটোকার্ডটির ‘শেখ হাসিনার বিষয়ে একি বার্তা দিলেন’ শীর্ষক শিরোনামের স্থলে ‘শেখ হাসিনা এখন ভারতের এম্পি হতে পারবেন’ লেখা যুক্ত করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

পরবর্তীতে উক্ত পোস্টের মন্তব্যের ঘর থেকে প্রাপ্ত দৈনিক নগর বার্তা নামের গণমাধ্যমের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একই শিরোনামের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের প্রেস সচিব তারিক চয়ন গত ১৩ মে তার এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে জানান, যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময়কালে কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক প্রসঙ্গে এক ছাত্রের করা প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়ে বলেন তিনি শেখ হাসিনার বিষয়ে নাক গলাতে চান না।

মূলধারার গণমাধ্যম বাংলাভিশনের ওয়েবসাইটেও একই তথ্য সম্বলিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে তারিক চয়নের করা সেই ফেসবুক পোস্টটির সন্ধানও পাওয়া যায়। কিন্তু কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে শেখ হাসিনার ভারতীয় পার্লামেন্টে প্রতিনিধি হওয়ার বিষয়ে রাহুল গান্ধীর মন্তব্য করার সত্যতা মিলেনি।  

সুতরাং, ‘শেখ হাসিনা এখন ভারতের এম্পি হতে পারবেন: রাহুল গান্ধী’ শিরোনামে ফেসবুকে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img