খিলগাঁও থানা বিএনপি নেতার নারী নির্যাতনের দৃশ্য দাবিতে ভারতের ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, “রাজ*ধানীর খিলগাঁও থানা বি’এন’পির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তরিকুল। স্ত্রীকে সন্তানদের সামনে নিয়মিত যৌ’তুকের দাবিতে নি’র্যাতন করে। যথাযথ কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি” শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

একই দাবিতে এক্সে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে। 

একই দাবিতে ইন্সাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে। 

অনুরূপ দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে। 

এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো অন্তত ১ কোটি বার দেখা হয়েছে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওতে প্রদর্শিত যুবক খিলগাঁও থানা বিএনপির নেতা নন এবংকি ঘটনাটি বাংলাদেশেরই কোনো স্থানের নয়। বরং, এটি ভারতের বিহারে জনকপুর এলাকায় এক স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে মারধরের ঘটনার ভিডিও। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিও থেকে প্রাপ্ত ইমেজ রিভার্স সার্চের মাধ্যমে ‘Govind Pratap Singh | GPS’ নামক এক্স একাউন্টে চলতি বছরের ২১ জুনে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে হুবহু মিল পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

উক্ত পোস্টের ক্যাপশনে দাবি করা হয়, বিহারের গয়া এলাকায় এক নারীকে বর্বরোচিত নির্যাতনের দৃশ্য এটি। নির্যাতনের শিকার নারী মারা গেছেন।এ ঘটনায় স্বামীর পরিবারের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। 

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘The Economic Times’ এর ওয়েবসাইটে গত ২২ জুন “Papa please, mummy ko chod do”: Woman dies by suicide after dowry assault in Bihar, shocking video emerges শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদনের বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, বিহারের গয়ার জানকপুর এলাকায় বসবাসকারী ঐ দম্পতির নাম অভিষেক কুমার ও নিশা কুমারী। নিশার স্বামী অভিষেক কুমার তাকে নির্দয়ভাবে মারধর করেছে। ঘটনার কিছুদিন পর নিশার মৃত্যু হয়। পরিবার দাবি করেছে, এটা একটা পরিকল্পিত হত্যা। যদিও অভিযুক্ত অভিষেক দাবি করেন, ঘটনার সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন না এবং বিষ সেবনের কারণে নিশার মৃত্যু হয়েছে। 

এছাড়া, আলোচ্য বিষয়ে ভারতীয় অন্যান্য সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন (News Karnataka, BollywoodShaadis) থেকে একই তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়। 

অর্থাৎ, এটি নিশ্চিত যে ভিডিওতে প্রদর্শিত যুবক খিলগাঁও থানা বিএনপি নেতা নন এবং ঘটনাটি বাংলাদেশেরও নয়। 

উল্লেখ্য, বর্তমানে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওতাধীন বিএনপির খিলগাঁও থানার কোনো কমিটি নেই। ২০২২ সালের ৭ এপ্রিল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আওতাধীন সকল থানা কমিটি বিলুপ্ত করা হয়।

সুতরাং, ভারতের বিহারে  স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে মারধরের ভিডিওকে বাংলাদেশে খিলগাঁও থানা বিএনপির কথিত নেতা তরিকুলের নারী নির্যাতনের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

আরও পড়ুন

spot_img