সিরাজগঞ্জে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় গণধোলাইয়ের শিকার ব্যক্তি বিএনপি নেতার ছেলে নয়

সম্প্রতি, ‘বিএনপির সংসদ সদস্যের ছেলে ধর্ষণ করতে গিয়ে কট খাইছে সিরাজগঞ্জ’- শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

প্রচারিত পোস্টগুলোতে গণধোলাইয়ের শিকার হওয়া এক ব্যক্তির ছবিও যুক্ত রয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে ধর্ষণ করতে গিয়ে জনতার হাতে গণধোলাই খাওয়া ব্যক্তি বিএনপির কোনো সাবেক সংসদ সদস্যের ছেলে নয়। বরং, গণধোলাই খাওয়া ব্যক্তির বাবা প্রয়াত আনোয়ার হোসেন। তিনি কখনো বিএনপির সংসদ সদস্য ছিলেন না। 

অনুসন্ধানে দেশ বুলেটিন নামক একটি সংবাদভিত্তিক ওয়েবসাইটে গত ২৭ এপ্রিল ‘বেলকুচি উপজেলায় ৫ম শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা, যুবককে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী’- শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে থাকা ছবির সাথে প্রচারিত পোস্টগুলোতে থাকা গণধোলাইয়ের শিকার ব্যক্তির ছবি ও আশেপাশের ব্যক্তির ছবির মিল রয়েছে। 

Comparison By Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২৬ এপ্রিল সকাল ৮ টায় বেলকুচি উপজেলার চালা বানিয়াপাড়া গ্রামের ৫ম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে গাছ থেকে আম পেড়ে দেওয়ার কথা বলে নদীর ধারে কাশবনের মধ্যে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন উপজেলার চালা সাত রাস্তার মোড় এলাকার মৃত আনোয়ার হোসেনের ছেলে মোঃ আজমীর (২৫)। পরে বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে মোঃ আজমীরকে এলাকাবাসী ধরে গণধোলাই দেয়। 

অর্থাৎ, ধর্ষণের চেষ্টাকারী মোঃ আজমীরের বাবা প্রয়াত আনোয়ার হোসেন। 

এছাড়া একাধিক গণমাধ্যমেও ধর্ষণের চেষ্টাকারী মোঃ আজমীরের বাবা প্রয়াত আনোয়ার হোসেন বলেই উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনগুলো পড়ুন- বিডিনিউজ২৪, ঢাকা পোস্ট এবং দেশ রূপান্তর। 

প্রতিবেদনগুলোতে আনোয়ার হোসেনের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি।

অন্যদিকে আনোয়ার হোসেন নামের কোনো ব্যক্তি সিরাজগঞ্জের বেলকুচি এলাকায় বিএনপির সংসদ সদস্য ছিলেন কিনা তা জানতে অনুসন্ধান করে আলোচিত দাবির সত্যতা মেলেনি। 

অনুসন্ধানে জানা যায়, পঞ্চমষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সহিদুল্লাহ খান এবং অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এম মোজাম্মেল হক বেলকুচি তথা সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর দুইজনের বাহিরে কেউ বেলকুচি উপজেলায় বিএনপি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হননি।

সুতরাং, সিরাজগঞ্জের বিএনপির সংসদ সদস্যের ছেলে ধর্ষণ করতে গিয়ে গণধোলাই খেয়েছে শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

আরও পড়ুন

spot_img