সম্প্রতি, “সন্তান হলে এমন হও। হোক সে মেয়ে বা ছেলে। মনে রাখবেন, পুরুষরা একবার ই মরে, কাপুরুষরা বারবার মরে” শিরোনামসহ ভিন্ন ভিন্ন ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফিলিং স্টেশনে যুবকের বুকে তরুণীর আগ্নেয়াস্ত্র তাক করার ভিডিওটি বাংলাদেশের নয় বরং, এটি ভারতের উত্তর প্রদেশের হরদই জেলার বিলগ্রাম সিএনজি স্টেশনে এক তরুণী কর্তৃক যুবকের বুকে আগ্নেয়াস্ত্র তাক করার দৃশ্য।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওর কিছু কী ফ্রেম রিভার্স সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম Times of India এর ওয়েবসাইটে গত ১৬ জুনে ‘Woman pulls gun on CNG attendant in Hardoi’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির দৃশ্যাবলীর মিল রয়েছে।

উপরোক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় আরেক সংবাদমাধ্যম The Economic Times এর ওয়েবসাইটে একই তারিখে অর্থাৎ গত ১৬ জুন “’Itni goliyaan maarungi…’: UP Woman points gun at CNG staff after safety rule clash, CCTV video goes viral” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনের বিস্তারিত অংশ থেকে জানা যায়, চলতি বছরের ১৫ জুন ভারতের উত্তর প্রদেশের হরদই জেলার বিলগ্রাম সিএনজি স্টেশনে শাহেদাবাদের বাসিন্দা আরিবা খান (২১), তাঁর বাবা এহসান খান, মা হুসনে বানু গাড়ির জ্বালানি ভরতে সিএনজি স্টেশনে যান। জ্বালানি ভরার সময় ফিলিং স্টেশনের পরিচারক রজনীশ কুমার নিরাপত্তার স্বার্থে তাঁদের গাড়ি থেকে নামতে বলেন। তবে তাঁরা আপত্তি করেন। এরপর তাঁদের সঙ্গে রজনীশ কুমারের তর্ক শুরু হয়। একপর্যায়ে রজনীশ কুমারের দিকে আরিবা খান আগ্নেয়াস্ত্র তাক করেন। এরপর তাঁকে তাঁর মা টেনে গাড়িতে নিয়ে যান। এই ঘটনায় পরিচারক রজনীশ কুমার, আরিবা খান, এহসান খান ও হুসনে বানুর বিরুদ্ধে বিলগ্রাম পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ করেন।
এছাড়া, একই বিষয়ে গত ১৭ জুন Times of India এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে হরদই জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) নীরজ জাদৌনকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, আরিবা খানের হাতের আগ্নেয়াস্ত্রটি এহসান খানের নামে লাইসেন্স করা। আগ্নেয়াস্ত্রটি ২৫টি কার্তুজসহ জব্দ করা হয়েছে এবং আরও তদন্ত চলছে। আগ্নেয়াস্ত্রটির লাইসেন্স বাতিলের জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে চিঠিও পাঠানো হয়েছে।
অর্থাৎ, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়, বরং এটি ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ফিলিং স্টেশনের দৃশ্য।
সুতরাং, ভারতের উত্তর প্রদেশে এক তরুণী কর্তৃক যুবকের বুকে আগ্নেয়াস্ত্র তাক করার দৃশ্যকে বাংলাদেশের ঘটনা দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।
তথ্যসূত্র