ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘাতের প্রেক্ষিতে আমেরিকার যুদ্ধ জাহাজে ইরানের হামলার দৃশ্য শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটিতে প্রদর্শিত অগ্নিকাণ্ডের শিকার জাহাজগুলো আমেরিকার যুদ্ধ জাহাজ নয় বরং, হরমুজ প্রণালীতে দুটি তেলবাহী জাহাজের সংঘর্ষে সৃষ্ট আগুনের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটি কিছু কী-ফ্রেমের রিভার্স ইমেজ সার্চে আজারবাইজানের গণমাধ্যম “Kanal13” এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৫ সালের ১৭ জুন “A tanker belonging to Russian shadow fleet crashes in the Gulf of Omam” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে থাকা ভিডিওর ৩ সেকেন্ড অংশ থেকে ১ মিনিট ১৮ সেকেন্ড অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে।

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে একই ঘটনায় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম “Reuters” এর ওয়েবসাইটে ২০২৫ সালের ১৭ জুন “Two oil tankers collide, catch fire near Strait of Hormuz” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “ গত ১৭ জুন হরমুজ প্রণালীর কাছে দুইটি তেলবাহী ট্যাংকারের সংঘর্ষে আগুন ধরে যায়, যেখানে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতের কারণে ইলেকট্রনিক বিঘ্নতা বেড়ে গেছে। তবে কোনো নাবিক আহত হননি এবং তেলের কোনো নিঃসরণও ঘটেনি। ইরান ও ইসরায়েল শুক্রবার থেকে একে অপরকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে আসছে, যার ফলে ইরান ও ওমানের মধ্যবর্তী গুরুত্বপূর্ণ জলপথে নেভিগেশন সিস্টেমে বিঘ্নতা দেখা দিয়েছে। এই প্রণালীতেই বিশ্বের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ সমুদ্রপথে পরিবাহী তেল পরিবাহিত হয়। সংযুক্ত আরব আমিরাতের কোস্ট গার্ডের বরাতে বলা হয়, তাদের পূর্ব উপকূল থেকে ২৪ নটিক্যাল মাইল দূরে সংঘর্ষের পর ‘আডালিন’ নামের একটি জাহাজ থেকে ২৪ জনকে উদ্ধার করে খোর ফাক্কান বন্দরে নেওয়া হয়েছে। ফ্রন্টলাইন নামক কোম্পানি রয়টার্সকে জানিয়েছে, এ ঘটনার তদন্ত করা হবে, তবে বাইরের কোনো হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।”
এ বিষয়ে সেসময় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম একই তথ্যসংবলিত সংবাদ (১,২,৩) প্রচার করেছে।
সুতরাং, হরমুজ প্রণালীতে দুটি তেলবাহী জাহাজের সংঘর্ষে সৃষ্ট আগুনের ঘটনাকে চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে আমেরিকার যুদ্ধ জাহাজে ইরানের হামলার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।