ইসরায়েলে ইরানের মিসাইল হামলার দৃশ্য দাবিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ভিডিও প্রচার 

চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের প্রেক্ষাপটে, ইরান কর্তৃক সমুদ্রের তলদেশ থেকে সাবমেরিন দিয়ে প্রথমবারের মত মিসাইল নিক্ষেপের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, সমুদ্রের তলদেশ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।  

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি ইরান কর্তৃক ইসরায়েলে সাবমেরিন দিয়ে মিসাইল হামলার দৃশ্য নয়; বরং এটি ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া কর্তৃক কৃষ্ণসাগর থেকে কিয়েভের কাছে ঝিটোমির শহরে ইউক্রেনের সামরিক অবকাঠামোর ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ভিডিও। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ২০২২ সালের ২৬ মার্চ তারিখে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত দাবিতে থাকা ভিডিওটির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হয়, রাশিয়া কৃষ্ণসাগর থেকে ইউক্রেনের ঝিটোমির অঞ্চলে চারটি ‘কালিব্র’ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। রাশিয়ার এই হামলায় ইউক্রেনের একটি অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামের গুদাম সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়েছে। (অনূদিত) 

পরবর্তীতে এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ব্রিটেন ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে একই তারিখে অর্থাৎ ২০২৪ সালের ২৬ মার্চে ‘Ukraine War: Russia launch missiles ‘from black sea’ targeting Ukraine’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওর বিস্তারিত বিবরণীতে বলা হচ্ছে, “রাশিয়ান সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, তারা কৃষ্ণসাগর থেকে ইউক্রেনের একটি সামরিক অবকাঠামোর ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ঝিটোমির, যা ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে প্রায় ৯৬ মাইল দূরে অবস্থিত।” (অনূদিত) 

এছাড়া, স্কাই নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত ভিডিওর বিস্তারিত অংশে আলোচ্য হামলা ও ঘটনার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন সংযুক্ত করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, কৃষ্ণসাগর থেকে ছোড়া ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনের লভিভ ও ঝিটোমিরে বিস্ফোরণ হয় এবং তেল ডিপো ও সামরিক স্থাপনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়। উক্ত প্রতিবেদনের শিরোনামে একই তথ্যের উল্লেখ রয়েছে এবং বিস্তারিত অংশে একই ভিডিওর উল্লেখ পাওয়া যায়। 

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের আগ থেকেই ইন্টারনেটে রয়েছে। যা থেকে নিশ্চিত যে এটি চলমান ইরান ইসরায়েল সংঘাতের ভিডিও নয়। 

সুতরাং, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে ইরান কর্তৃক ইসরায়েলে মিসাইল নিক্ষেপের দৃশ্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

আরও পড়ুন

spot_img