গত ৬ মে পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরে একাধিক বিস্ফোরণের খবর মেলে্ ভারত দাবি করে, ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে এক অভিযানে তারা জইশ-ই-মোহাম্মদ ও লস্কর-ই-তইয়েবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি স্থাপনা লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায়। পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে, ভারতীয় পাইলট পাকিস্তানে ধরা পড়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।
ভিডিওটিতে দেখা যায়, মুখে রক্তাক্ত একজন আহত পাইলট মাটিতে শুয়ে আছেন, তিনি তখনও প্যারাসুটের সাথে বাঁধা। তাকে উদ্দেশ্য করে একজন ব্যক্তিকে ইংরেজিতে বলতে শোনা যায়, “stay calm sir, to whom we should call?”

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
উক্ত দাবিতে এক্সে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এটি ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সংঘাতে কোনো ভারতীয় পাইলটকে পাকিস্তানে আটকের ঘটনার ভিডিও নয়। বরং, ভিডিওটি ২০১৯ সালে অ্যারো ইন্ডিয়া এয়ার শো-এর জন্য অনুশীলন করার সময় বেঙ্গালুরুতে ভারতীয় বিমান বাহিনীর সূর্য কিরণ অ্যাক্রোবেটিক দলের দুটি জেট বিমান পরস্পরের সাথে সংঘর্ষে বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় আহত এক পাইলটকে উদ্ধারের সময় ধারণ করা হয়েছিল।
এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের কন্নড় ভাষার সংবাদ চ্যানেল ‘Tv9 Kannada’ এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ‘Local Rescues One of The Pilot Suffering Grievous Injuries After 2 Surya Kiran Jets Crash in B’luru’ শীর্ষক ক্যাপশনে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়, যার সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

ক্যাপশন থেকে জানা যায়, এটি বেঙ্গালুরুতে ভারতীয় বিমান বাহিনীর সূর্য কিরণ দলের দুটি জেট বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর স্থানীয়রা গুরুতর আহত এক পাইলটকে উদ্ধারের ভিডিও।
দক্ষিণ ভারতের ডিজিটাল সংবাদ মাধ্যম ‘The News Minute’ এর ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ‘Wanted him to be OK’: B’luru man who comforted Surya Kiran pilot speaks to TNM শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি অ্যারো ইন্ডিয়া এয়ার শো-এর জন্য অনুশীলন করার সময় ভারতীয় বিমান বাহিনীর সূর্য কিরণ অ্যাক্রোবেটিক দলের দুটি জেট বিমান পরস্পরের সাথে সংঘর্ষে বিধ্বস্ত হয়েছিল। উক্ত দুর্ঘটনায় ১ জন পাইলট নিহত ও ২ জন আহত হন।
জানা যায়, ভিডিওতে আহত ভারতীয় বিমান বাহিনীর পাইলটকে যিনি সান্ত্বনা দিয়েছিলেন, তিনি হলেন চেতন কুমার বিএম নামের ২২ বছর বয়সী অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র। যিনি বেঙ্গালুরুর ইয়েলাহাঙ্কা এয়ার ফোর্স স্টেশনের কাছে থাকেন।
সুতরাং, ২০১৯ সালে ভারতে মহড়ার সময় দুটি বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহত ভারতীয় বিমান বাহিনীর এক পাইলটকে উদ্ধারের সময় ধারণকৃত ভিডিওটিকে সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষে ভারতীয় পাইলট পাকিস্তানে জীবিত ধরা পড়েছেন দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।