সম্প্রতি, অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ‘রোহিঙ্গারা আমাদের সম্পদ, তারা বাংলাদেশের পাসপোর্টে বিদেশে গেলে আমরা রেমিট্যান্স পাব।’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।
ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘রোহিঙ্গারা আমাদের সম্পদ, তারা বাংলাদেশের পাসপোর্টে বিদেশে গেলে আমরা রেমিট্যান্স পাব’ শিরোনামে প্রথম আলো কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাও এমন কোনো মন্তব্য করেননি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ভুয়া এই ফটোকার্ডটি তৈরি করে প্রচার করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে প্রথম আলোর লোগো এবং এটি প্রকাশের তারিখ ০৩ মে, ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটির এমন একটি স্ক্রিনশট খুঁজে পাওয়া যায়, যেখানে ফটোকার্ডটি ৪৭ মিনিট পূর্বে প্রথম আলোর ফেসবুক পেজ থেকে প্রকাশিত এবং এতে ৪৭২টি প্রতিক্রিয়া রয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে। পর্যবেক্ষণ এবং বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই একটি স্ক্রিনশটই একাধিক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচার করা হয়েছে।
কিন্তু আলোচিত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড প্রথম আলোর ফেসবুক পেজ থেকে প্রকাশ করা হলে সেটির বিভিন্ন সময়ের স্ক্রিনশট ফেসবুকে পাওয়া যেত। কিন্তু তা ঘটেনি। এর ভিত্তিতে প্রতীয়মান হয় যে, এই স্ক্রিনশটটি সম্পাদিত।
পরবর্তী অনুসন্ধানে পত্রিকাটির ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তাছাড়া, প্রথম আলোর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হ্যান্ডেলগুলো থেকে প্রচারিত ফটোকার্ডের ডিজাইন পর্যালোচনা করে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডের ফন্টের ডিজাইনের সাথে অমিল খুঁজে পাওয়া যায়।
অর্থাৎ, প্রথম আলো এমন কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি।
পাশাপাশি, আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্য অন্য কোনো গণমাধ্যমেও পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, ‘রোহিঙ্গারা আমাদের সম্পদ, তারা বাংলাদেশের পাসপোর্টে বিদেশে গেলে আমরা রেমিট্যান্স পাব- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা’ শীর্ষক দাবিতে প্রথম আলোর নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।
তথ্যসূত্র
- Rumor Scanner’s own analysis
