ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পারিবারিক কলহের জেরে দুই বোনের হত্যাকাণ্ড ছড়াল ধর্ষণের পর হত্যা দাবিতে

সম্প্রতি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একই খাটে দুই বোনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)-এ ছড়িয়ে পড়েছে।

উক্ত দাবিতে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই বোনকে ধর্ষণের পর হত্যার কোনো ঘটনার নয় বরং, এটি কসবা উপজেলার ধ্বজনগর গ্রামে পারিবারিক কলহের জেরে আমির হোসেনের স্ত্রী ও তার শ্যালিকাকে শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।

ভাইরাল ভিডিওটির ডান কোণে ‘Red News Tv’ লেখা জলছাপ দেখা যায়। এই সূত্র ধরে, একই নামের একটি ফেসবুক পেজে গতকাল (৩ মার্চ) প্রকাশিত একটি পোস্টে একই ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টের ক্যাপশনে দাবি করা হয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার ধ্বজনগর এলাকায় স্বামীর হাতে আপন দুই বোন খুনের শিকার হয়েছেন। নিহতরা হলেন জুতি বেগম (২৫) ও তার ছোট বোন স্মৃতি আক্তার (১৫), তাদের পিতা মৃত রোশন মিয়া। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মো. আমির হোসেন কসবার গোপীনাথপুর এলাকার বাসিন্দা, তবে তার পিতার নাম জানা যায়নি। এছাড়া, কী কারণে কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

Comparison: Rumor Scanner. 

একুশে টিভিতে গতকাল (৩ মার্চ) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে  জানানো হয়, ২ মার্চ দিবাগত রাতে কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ধ্বজনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরে তাদের শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত সামিউল এক সপ্তাহ আগে শ্বশুরবাড়িতে আসেন এবং রোববার রাতের খাবার শেষে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে রাতের কোনো এক সময় তিনি স্ত্রী ও তার বোনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে, সোমবার সকালে পরিবারের সদস্যরা খবর দিলে পুলিশ ঘরের ভেতর থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত পালিয়ে যান।

এদিকে, প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদনে কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল কাদেরের বরাতে জানানো হয়, সুরতহাল প্রতিবেদনে দেখা গেছে, স্মৃতির বাঁ পাশের চোয়ালের নিচে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, জুতিকে বালিশ চাপা দিয়ে এবং স্মৃতিকে হাতে চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল কাদেরের সঙ্গে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনি জানান, ধর্ষণের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এটি মূলত পারিবারিক বিরোধের জেরে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনায় একমাত্র অভিযুক্ত আমির হোসেনকে আজ (৪ মার্চ) চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সুতরাং,  ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পারিবারিক কলহের জেরে দুই বোনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে  ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একই খাটে দুই বোনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img