সম্প্রতি, কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের মো: ইয়াসিন নামের চোখের ক্যান্সারে আক্রান্ত এক শিশুর অপারেশনের জন্যে ৭ লক্ষ টাকার প্রয়োজন দাবিতে একটি শিশুর কয়েকটি ছবি যুক্ত করে একটি মানবিক সাহায্যের আবেদন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। দাবি করা হচ্ছে, ক্যান্সারাক্রান্ত ওই শিশু কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের তৃতীয় তলার ২১ নাম্বার রুমের ১৩ নং কেবিনে ভর্তি আছে। শিশুর বাবা চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে না পারায় তাকে সহায়তার জন্যে বিভিন্ন পোস্টে ভিন্ন ভিন্ন বিকাশ ও নগদ নাম্বারও প্রদান করা হয়েছে।
ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির শিশুর নাম মো: ইয়াসিন নয়। এছাড়াও ছবিগুলো সাম্প্রতিক সময়েরও নয়। বরং, তাজরিন নামের এই শিশুর অসুস্থতার ছবিগুলো প্রায় ৫ বছর আগে ধারণ করা হয়েছিল।
দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতভিত্তিক জনপ্রিয় ক্রাউডফান্ডিং প্ল্যাটফর্ম Ketto এর ওয়েবসাইটে আলোচিত দাবির শিশুর ছবির সন্ধান পাওয়া যায়।
ওয়েবসাইটটি থেকে জানা যায়, ছবির শিশুর নাম তাজরিন। তাজরিনের বাম অরবিটাল র্যাবডোমায়োসারকোমা নামের এক বিরল প্রকৃতির ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিল। ওয়েবসাইটটি থেকে আরও জানা যায়, কয়েক দফায় অ্যাপোলো হাসপাতাল এবং সিরাজগঞ্জে অবস্থিত খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা নেওয়ার পর সে বর্তমানে সুস্থ আছে।
তবে ওয়েবসাইটের কোথাও তাকে কুষ্টিয়ার সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্যে ভর্তি করার বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি দেখা যায়, ওয়েবসাইটে তার চিকিৎসার জন্যে আর্থিক সহায়তা চেয়ে প্রথম পোস্টটি ৫ বছর আগে করা হয় এবং তাজরিন বিষয়ক তথ্য সর্বশেষ ৪ বছর আগে হালনাগাদ করা হয়।
এছাড়া, মো: ইয়াসিনের নামে আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদনকৃত ফেসবুক পোস্টগুলোয় উল্লিখিত ব্যক্তিগত বিকাশ ও নগদ নাম্বারে যথাক্রমে (01947431040, 01714877667, 01324089505) একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কেউ-ই ফোন কল রিসিভ করেননি।
তাছাড়াও ট্রু কলারের মাধ্যমে জানা যায়, আলোচিত পোস্টগুলোতে প্রদত্ত নাম্বারগুলো ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তির। যার মধ্যে একটিতে ‘প্রতারক হতে সাবধান’ লেখা রয়েছে।
সুতরাং, আর্থিক সহায়তার নামে প্রতারণার উদ্দেশ্যে তাজরিন নামের শিশুর পুরোনো ছবি ক্যান্সার আক্রান্ত শিশু মো: ইয়াসিনের ছবি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে: যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Ketto Website: Tajrin’s Cancer Is Spreading, Help Me Save Her From This Deadly Disease – Ketto
- Rumor Scanner’s Analysis
