বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার গ্রেফতারের দাবিটি মিথ্যা

সম্প্রতি “লাইভঃ ব্রেকিং নিউজ মাত্র পাওয়া : গ্রেফতার খালেদা জিয়া, আজ সকাল থেকে  আবার নয়াপল্টনে সমাবেশে অবস্থান নিয়েছে বিএনপি নেতাকর্মীরা।” শীর্ষক শিরোনামে কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ‘বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া গ্রেফতার’ শীর্ষক দাবিটি সত্য নয় বরং কোনো ধরনের নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে খালেদা জিয়ার গ্রেফতারের দাবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

খালেদা জিয়ার গ্রেফতারের তথ্যটির সত্যতা যাচাইয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম প্রথমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলো বিশ্লেষণ করে। বিশ্লেষণে ভিডিওগুলোর শিরোনাম ব্যতীত অন্য কোথাও খালেদা জিয়ার গ্রেফতার সম্পর্কিত কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে তথ্যটির অধিকতর সত্যতা যাচাইয়ে গণমাধ্যমগুলোতেও যাচাই করে খালেদা জিয়ার গ্রেফতার সম্পর্কিত সর্বশেষ নতুন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, চলতি বছরের গত ৭ নভেম্বর মানহানির অভিযোগে ঢাকা ও নড়াইলে দুই মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামিন পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

এই জামিন পাওয়া নিয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবী কায়সার কামাল গণমাধ্যমকে বলেন, “পূর্ববর্তী জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় আবার মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন নিয়ে গিয়েছিলাম। আদালত দুটি মামলা নিষ্পত্তি পর্যন্ত জামিন দিয়েছেন।”

পাশাপাশি অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে খালেদা জিয়া কারাবন্দি ছিলেন। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের এ কারাদণ্ড দেন বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত।

তবে পরবর্তীতে ২০২০ সালের মার্চে নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করা হয়। এরপর থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে তিনি বাসাতেই অবস্থান করছেন।

অর্থাৎ, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া গ্রেফতারের দাবিটি ভিত্তিহীনভাবেই প্রচার করা হচ্ছে।

মূলত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের এ কারাদণ্ড দেন বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত। তবে পরবর্তীতে ২০২০ সালের মার্চে নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করা হয়। এরপর থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে তিনি বাসাতেই অবস্থান করছেন। এছাড়া চলতি বছরের গত ৭ নভেম্বর মানহানির অভিযোগে ঢাকা ও নড়াইলে দুই মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামিন পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। অর্থাৎ, নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই খালেদা জিয়ার গ্রেফতার সম্পর্কিত দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে ১০ ডিসেম্বর  ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশে খালেদা জিয়ার উপস্থিত থাকার দাবিতে একটি তথ্য ছড়িয়ে পড়লে সে সময় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, “প্রশ্নই হয় না। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বাসায় চিকিৎসাধীন। এগুলো অসৎ উদ্দেশ্য প্রচারণা করে যাতে করে নিজেদের মধ্যে বিভ্রান্ত তৈরি করা যায়। এর থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করছি।”

প্রসঙ্গত, জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, দলের নেতা-কর্মীদের গুলি করে হত্যার প্রতিবাদ এবং খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি ৯টি বিভাগীয় (সাংগঠনিক বিভাগসহ) গণসমাবেশের আয়োজনের পাশাপাশি ১০ ডিসেম্বর ঢাকাতেও গণসমাবেশ আয়োজন করে দলটি। এ সমাবেশকে ঘিরে ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়কে ঘিরে পুলিশ ও বিএনপির মধ্যে গত ৭ ডিসেম্বর সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনা ঘটে।

সুতরাং, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া গ্রেফতারের দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে থাকা তথ্যটি সঠিক নয়; বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img