সম্প্রতি, ঝালকাঠির একটি ঘটনায় একজন হিন্দু নারীর কান্নার এবং সাহায্য প্রার্থনা সম্বলিত একটি সংবাদের ভিডিও প্রতিবেদন প্রচার করে দাবি করা হয়েছে যে তার ৪ বছরের মেয়ে একজন মুসলিম ব্যক্তি কর্তৃক ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছে।

অভিযুক্তকে মুসলিম হিসেবে প্রচার করা হয়েছে এমন কিছু এক্স পোস্ট এখানে, এখানে, এবং এখানে।
একই দাবির ইনস্টাগ্রাম পোস্ট দেখুন এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঝালকাঠির উল্লিখিত ঘটনার অভিযুক্ত ব্যক্তি মুসলিম নন। প্রকৃতপক্ষে, তার নাম নির্জন সিকদার এবং তিনি একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী।
আলোচিত ভিডিও প্রতিবেদনটি পর্যবেক্ষণ করে এতে DNN নামে একটি স্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টালের লোগো দেখতে পাওয়া যায়। উক্ত সূত্র ধরে পোর্টালটির ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানে অভিযুক্তকে প্রতিবেশী হিসেবে উল্লেখ করা হয় এবং তার নাম নির্জন সিকদার হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তবে ভিডিও থেকে তার ধর্মীয় পরিচয় স্পষ্টভাবে জানা যায় না।
অভিযুক্তের ধর্মীয় পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য অনুসন্ধানে গত মাসের ১৯ মার্চের ( ১৯ মার্চ, ২০২৫) একটি ফেসবুক পোস্ট খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। পোস্টটিতে ভিডিও প্রতিবেদনে অভিযুক্তের যে ছবি দেখানো হয়েছে ওই একই ছবি যুক্ত ছিল এবং পোস্টের ক্যাপশনে ছেলেটি হিন্দু বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিত হতে, ওই ভিডিও প্রতিবেদন তৈরিকারী স্থানীয় নিউজ পোর্টাল ও সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলে রিউমর স্ক্যাবার টিম। তাদের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত হিন্দু বলে নিশ্চিত করা হয়।
এছাড়া, ঘটনাটি নিয়ে মার্চ মাসে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেখানে উল্লেখ করা হয়- “বাহরাইনপ্রবাসী মিঠুন মিস্ত্রীর সাত বছরের মেয়ে গত ৪ মার্চ দুপুরে বাড়ির পাশে টমেটো আনতে গেলে প্রতিবেশী নির্জন সিকদার তাকে ফুঁসলিয়ে একটি কলাবাগানে নিয়ে যায় এবং জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে। এরপর ৯ মার্চ বিকেলে নির্জন শিশুটির বাড়িতে গেলে, শিশুটি তাকে দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। বিষয়টি তার মা দোলা মণ্ডলের নজরে এলে তিনি মেয়েকে জিজ্ঞাসা করেন। তখন শিশুটি কান্নাজড়িত কণ্ঠে সেই দিনের ঘটনা খুলে বলে। ঘটনার পর শিশুটির দাদা নিহার রঞ্জন মিস্ত্রী বাদী হয়ে নির্জন সিকদারের বিরুদ্ধে কাঁঠালিয়া থানায় ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।”
অর্থাৎ, ঝালকাঠির শিশু শ্লীলতাহানির ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তি মুসলিম শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।
Sources
- Facebook Post
- Statement of the Reporter
- News Report on the Incident