নোয়াখালীতে তিন যুবলীগ নেতাকর্মীকে নির্যাতন করে হত্যার গুজব 

সম্প্রতি, ‘নোয়াখালী সদর উপজেলা ২ং দাদপুর নলুয়া বাজার এলাকায় ৩ জন যুবলীগ নেতা কর্মীকে অমানুষিক ভাবে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আর কতো জীবন নিলে খুশি হবে?’ শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নোয়াখালী সদর উপজেলার ২নং দাদপুর নলুয়া বাজার এলাকায় ৩ যুবলীগ নেতাকে  অমানুষিকভাবে নির্যাতন করে হত্যা করার দাবিটি সঠিক নয় বরং, গরুচুরির দায়ে আটক হওয়া চারজনের তিনজনকে বিক্ষুব্ধ জনতা গণধোলাই দিলেও কেউ মারা যাননি। 

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম বা বিশ্বস্ত সূত্রে আলোচিত দাবির সপক্ষে  কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

তবে, গত ১৯ নভেম্বর বাংলাদেশ মোমেন্টস এর ওয়েবসাইটে “নোয়াখালীতে ৪ গরু চোর গ্রেফতার” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ১৯ নভেম্বর ভোরে নোয়াখালী সদর উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের নলুয়া বাজার এলাকায় গরুচুরির দায়ে চারজনকে আটক করে পুলিন৷ পুলিশ জানায়, এঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা চোরদের গণপিটুনি দিলে ৩জন মারাত্নক আহত হয়। পরে তাদের চিকিৎসার জন্য নোয়াখালীর ২৫০ শর্য্যার জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। অপর এক আসামীকে আসমীকে গ্রেফতার দেখিয়ে বিচারিক আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। উক্ত প্রতিবেদনে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি।

বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সুধারাম মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ জানান, উক্ত ঘটনায় কেউ নিহত হননি। আহতদের মধ্যেও কেউ মারা যাননি। 

এছাড়া বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় একাধিক সংবাদ কর্মীর সাথে কথা বলেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

এখন টিভির নোয়াখালী প্রতিনিধি নাসিম শুভ এবং প্রথম আলোর নোয়াখালী প্রতিনিধি মাহাবুব উভয়ই উক্ত ঘটনায় কেউ নিহত হননি বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন। 

অর্থাৎ, গরুচুরির দায়ে আটক হওয়া চারজনের তিনজন বিক্ষুব্ধ জনতার গণধোলাইয়ে আহত হলেও কেউ নিহত হননি। 

পরবর্তীতে আলোচিত পোস্টগুলোতে থাকা ছবির বিষয়ে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে গত ১৯ নভেম্বর ‘মোঃ মোতাহেল খাঁন’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত একটি পোস্টে (আর্কাইভ) আলোচিত ছবিগুলো খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook 

উক্ত পোস্টে বলা হয়, নোয়াখালী সদর উপজেলা ২ নং দাদপুর ইউনিয়ন ১ নং ওয়ার্ড নলুয়া বাজার ঈমান ডাক্তারের বাড়িতে রাতে ৩ জন গরু চোর ধরা খায় জনগণের হাতে। এলাকাভিত্তিক পাহারা বসিয়ে চোর ডাকাত ধরার জন্য স্থানীয় জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

উক্ত পোস্টেও আহত ব্যক্তিদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি। 

সুতরাং, নোয়াখালী সদর উপজেলার ২ং দাদপুর নলুয়া বাজার এলাকায় ৩ যুবলীগ নেতাকে অমানুষিক ভাবে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

আরও পড়ুন

spot_img