নিজের দাদা রাজাকার ছিলেন বলে মন্তব্য করেননি সারজিস, সময়ের কণ্ঠস্বরের সম্পাদিত ফটোকার্ড প্রচার

সম্প্রতি ‘আমার দাদা প্রকৃত পক্ষে একজন রাজাকার ছিলেন: সারজিস আলম’ শীর্ষক শিরোনামে অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কণ্ঠস্বরের ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে  (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে  (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম তার দাদা রাজাকার ছিল দাবি করে কোনো কোনো মন্তব্য করেননি এবং সময়ের কণ্ঠস্বরও উক্ত দাবিতে কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে সময়ের কণ্ঠস্বরের ফটোকার্ডের ডিজাইন নকল করে এই ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে সময়ের কণ্ঠস্বরের লোগো রয়েছে এবং এটি প্রকাশের তারিখ ৪ জুন, ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে।

সময়ের কণ্ঠস্বরের লোগো ও ফটোকার্ড প্রকাশের তারিখের সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবি সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, সময়ের কণ্ঠস্বরের ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে গত ৪ জুন গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে “মুক্তিযু’দ্ধ চলাকালীন শেখ মুজিব মাঠে ছিলেন না: সারজিস আলম” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটির সাথে এই ফটোকার্ডটির ডিজাইন ও ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবির হুবহু মিল রয়েছে। সময়ের কণ্ঠস্বরের মূল ফটোকার্ডটিতে “মুক্তিযু’দ্ধ চলাকালীন শেখ মুজিব মাঠে ছিলেন না: সারজিস আলম” শীর্ষক বাক্য থাকলেও প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে এর পরিবর্তে “আমার দাদা প্রকৃত পক্ষে একজন রাজাকার ছিলেন: সারজিস আলম” শীর্ষক বাক্য লেখা হয়েছে।

Photocard Comparison By Rumor Scanner

অর্থাৎ, সময়ের কণ্ঠস্বরের এই ফটোকার্ডটির শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

মূল ফটোকার্ড সম্বলিত সময়ের কণ্ঠস্বরের মন্তব্যের ঘরে পাওয়া গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “০৪ জুন (বুধবার) সকাল ১০টায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকের এক পোস্টে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম জানান, মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে ইচ্ছাকৃতভাবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কাছে বন্দি হয়ে বিজয়ের পর পর্যন্ত শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের জেলে বন্দি ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান থাকলেও মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তিনি সরাসরি মাঠে ছিলেন না।” 

পাশাপাশি, আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্য অন্য কোনো গণমাধ্যমেও পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমকে উদ্ধৃত করে “আমার দাদা প্রকৃত পক্ষে একজন রাজাকার ছিলেন” শিরোনামে সময়ের কণ্ঠস্বরের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img