ইত্তেফাকের ফটোকার্ড বিকৃত করে ছাত্রদলের নাম উল্লেখ করে ভুয়া তথ্য প্রচার

সম্প্রতি, দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার সূত্রে ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জিমে গোপনে নারীর ভিডিও ধারণ, ছাত্রদল নেতা গ্রেপ্তার’ শীর্ষক তথ্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ছাত্রদল

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জিমে নারীর গোপন ভিডিও ধারণের অভিযোগে ছাত্রদলের কোনো নেতা গ্রেপ্তার হননি এবং উল্লিখিত দাবিতে দৈনিক ইত্তেফাকও কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি বরং গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে এক ছাত্রলীগকে নেতাকে নিয়ে প্রকাশিত একটি সংবাদের ফটোকার্ডকে এডিট করে ছাত্রদলের নামে প্রচার করা হয়েছে।

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ফটোকার্ডটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, উক্ত ফটোকার্ডটিতে ইত্তেফাকের লোগো এবং তারিখ হিসেবে ৩১ আগস্টের কথা উল্লেখ রয়েছে।

পরবর্তীতে উল্লিখিত তথ্যের সূত্র ধরে দৈনিক ইত্তেফাকের ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে, গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে গত ৩১ আগস্ট “ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জিমে গোপনে নারীর ভিডিও ধারণ, ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার” শীর্ষক শিরোনাম সম্বলিত একটি ফটোকার্ড (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ফটোকার্ডের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডের সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়। পাশাপাশি আলোচিত ফটোকার্ডে সংযুক্ত ব্যক্তির ছবির সাথে ইত্তেফাকের ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডে সংযুক্ত ব্যক্তির ছবির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Photocard Comparison by Rumor Scanner 

তবে উক্ত ফটোকার্ডে এই ব্যক্তিকে ছাত্রদল নেতা উল্লেখ করা হলেও আলোচিত ফটোকার্ডে ছাত্রলীগ নেতা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এছাড়া, একই দিনে দৈনিক ইত্তেফাকের ওয়েবসাইটে “ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জিমে গোপনে নারীর ভিডিও ধারণ, ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মৌলভীপাড়ার একটি ব্যায়ামাগারে আসা নারীর ব্যায়াম করার দৃশ্য গোপনে ভিডিও ধারণের অভিযোগে

গত ৩০ আগস্ট সন্ধ্যায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন ব্যায়ামাগারের পরিচালক জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হাবিবুল্লাহ ভূঁইয়া বিপ্লব, ফিটনেস প্রশিক্ষক মিতু আক্তার ও সাইম।

এছাড়া, উক্ত বিষয়ে অন্যান্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনগুলো দেখুন ইউএনবি, সমকাল, যায় যায় দিন

অর্থাৎ, ছাত্রদল নেতা নয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জিমে গোপনে নারীর ভিডিও ধারণ করার অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন। 

মূলত, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক নারীর ব্যায়াম করার দৃশ্য গোপনে ধারণ করার অভিযোগে গত ৩০ আগস্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হাবিবুল্লাহ ভূঁইয়া বিপ্লবসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। উক্ত বিষয়ে মূলধারার গণমাধ্যম ইত্তেফাকের ফেসবুক পেজে “ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জিমে গোপনে নারীর ভিডিও ধারণ, ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার” শীর্ষক তথ্য উল্লেখ করে ফটোকার্ড প্রকাশিত হয়। উক্ত ফটোকার্ডকেই ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় বিকৃত  করে ‘ছাত্রলীগ’ শব্দটির স্থলে  ‘ছাত্রদল’ শব্দটি বসিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত আট মাসে বিভিন্ন গণমাধ্যমের নাম, লোগো, শিরোনাম এবং নকল ফটোকার্ড ব্যবহার করে অপপ্রচারের বিষয়ে বিস্তারিত ফ্যাক্ট ফাইল প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জিমে গোপনে নারীর ভিডিও ধারণ, ছাত্রদল নেতা গ্রেপ্তারশীর্ষক দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img