গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাত থেকে ‘এই মুহূর্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বয়ক ও শিবির জঙ্গিদের গণধলাই চলছে,,’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে৷

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিবের কর্মীদের গণধোলাইয়ের শিকার হওয়ার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। প্রকৃতপক্ষে, চলতি বছরের আগস্ট মাসে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর দুর্বৃত্তদের হামলার ঘটনার ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে এশিয়ান টিভির ইউটিউব চ্যানেলে গত ০১ সেপ্টেম্বর ‘কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলা’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির সাদৃশ্য রয়েছে।

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটির ০০:০৬ থেকে ০০:৩৬ অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল রয়েছে।
একই বিষয়ে যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে গত ৩১ আগস্ট ‘এবার ময়মনসিংহে বাকৃবিতে শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলা’ শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদনেও একই ধরনের দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়।
পরবর্তীতে, এ বিষয়ে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে গত ৩১ আগস্ট ‘আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, ৭ ঘণ্টা পর মুক্ত অবরুদ্ধ শিক্ষকেরা’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলনরত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছেন একদল ব্যক্তি। গত ৩১ আগস্ট রাত পৌনে আটটার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
এর আগে কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবি পূরণ না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ দুই শতাধিক শিক্ষককে সেদিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে অবরুদ্ধ করেন ওই দুটি অনুষদের শিক্ষার্থীরা।
৩১ আগস্ট রাতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করছিলেন ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) সৈয়দ শাহনেওয়াজ মোর্শেদ অপু। এ সময় শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠি হাতে হামলা চালায় একদল ব্যক্তি। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে তারা শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনের তালা খুলে শিক্ষকদের বের করে দেন।
হামলাকারীদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘হঠাৎ করে দেখি ভিসি স্যারের বাসভবনের সামনের রাস্তা দিয় অনেক লোক আসছে এবং অডিটোরিয়ামের ডান পাশ থেকে অনেক চিৎকারও আসছিল। পরে দেখি, ওখানে থাকা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে এবং শিক্ষার্থীদেরকে মারছে। তারপর সবাই লাইব্রেরিতে আশ্রয় নেই।’
সুতরাং, ঢাবিতে বৈছাআ ও ছাত্রশিবিবের কর্মীদের গণধোলাইয়ের দৃশ্য দাবিতে বাকৃবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর দুর্বৃত্তদের হামলার ঘটনার ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।