সম্প্রতি “আ’ন্দো’লনের ঝ*ড় উঠছে, মোদির চেয়ার দুলছে! দাদা, এবার কই পালাইবা?” শিরোনামে ভারতের সাম্প্রতিক সংঘর্ষ দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফেসবুকে প্রচারিত পোস্টগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভাইরাল ভিডিওটি প্রায় ৬০ লক্ষ বার দেখা হয়েছে এবং ১ লক্ষ ৭৮ হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট হতে প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে। এছাড়া, ভিডিওটিতে ১০ হাজারের ও বেশি মন্তব্য হতে দেখা গেছে।
একই দাবিতে ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে এবং এখানে।
ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে।
টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি ভারতের নয়। প্রকৃতপক্ষে, সাম্প্রতিক সময়ে ঘটা নেপালের আন্দোলনের ভিডিওকে ভারতে মোদিবিরোধী আন্দোলনের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর একাধিক কী-ফ্রেম রিভার্স সার্চের মাধ্যমে ‘African Hub’ নামক এক্স অ্যাকাউন্টে গত ১১ সেপ্টেম্বরে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

ভিডিওটির বর্ণনা থেকে জানা যায়, এটি নেপালে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের উপর চড়াও হওয়ার মুহূর্তের দৃশ্য।
উপরোক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ‘CBC News’ এর ওয়েবসাইটে গত ০৮ সেপ্টেম্বরে “At least 19 killed as police open fire on Nepal protests over corruption, social media ban” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্যমতে, নেপালে দুর্নীতি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের প্রতিবাদে তরুণদের বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে অন্তত ১৯ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছে। আন্দোলনটি “জেন-জি” নেতৃত্বাধীন বলে জানানো হচ্ছে, যা দেশটিতে তরুণদের দুর্নীতি, বেকারত্ব ও সরকারি দমননীতির প্রতি গভীর হতাশার প্রতিফলন বলেও প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, নেপালে তরুণদের নেতৃত্বে এই বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে কে পি শর্মা অলি নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন ঘটে এবং অন্তর্বর্তী সরকারের নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সুশীলা কারকি শপথ নেন। নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কারকি ছয় মাসের বেশি সময় এই পদে থাকবেন না এবং আগামী বছরের ৫ মার্চ দেশটির জাতীয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আসা সরকারের হাতে তিনি ক্ষমতা তুলে দেবেন বলে জানিয়েছেন।
সুতরাং, নেপালে পুলিশের সাথে বিক্ষোভকারীদের আন্দোলনের ভিডিওকে ভারতে সাম্প্রতিক সময়ে মোদিবিরোধী আন্দোলনের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।