সম্প্রতি ধানক্ষেতে পড়ে থাকা এক নারীর মরদেহের ছবি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করে ওই নারীর নাম উপমা রায় দাবি করে বলা হয়েছে— অনেক বোঝানোর পরেও কয়েক মাস আগে মেয়েটি মুসলমান প্রেমিককে বিয়ে করে ইসলাম ধর্মগ্রহণ করেছিল, সুখে থাকার আসায়। ময়মনসিংহ গৌরীপুর উপজেলার বোকাইনগর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের কবিরাজ বাড়ির কচুক্ষেতে তার লাশ পাওয়া গেল। পোস্টগুলোতে বলা হয়েছে, এক মুসলিম যুবকের প্রেমের ফাঁদে পড়ে উপমা রায় ইসলাম ধর্মগ্রহণ করে সালমা আক্তার নাম হয়ে ওই যুবককে বিয়ে করে। ধর্মান্তরের ফলাফল হিসেবেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে এসব পোস্টে উল্লেখ করা হয়।

ফেসবুক ও এক্সে প্রচারিত এমন দাবির কিছু পোস্ট এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত নারীর নাম উপমা রায় নয় বরং তার নাম হোসনে আরা আক্তার এবং তিনি জন্মগতভাবেই মুসলিম।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে Firoz Shai নামের এক ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ০২ জুলাই প্রকাশিত এক পোস্টে একই স্থানে ওই মৃতদেহের আরো দুটি ছবি পাওয়া যায়। পোস্টে ওই নারীকে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার বোকাইনগর ইউনিয়নের কাওলাঠিয়া গ্রামের হোসনে আরা বেগম হিসেবে এবং তাকে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

একইদিন গৌরীপুর টিভি নামের ফেসবুক পেজের পোস্টের ভিডিওতে মৃতদেহ উদ্ধার হওয়া নারীর মাকে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায় এবং তার বাবার নাম ওই পোস্টে আব্দুল গণি হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
পরবর্তীতে উক্ত হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ঘটনার ওপর মানবজমিনের গত ৩ জুলাই প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করে হয়, “ময়মনসিংহের গৌরীপুরে হোসনে আরা খাতুন (৩৫) নামে এক যুবতীকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল উপজেলার বোকাইনগর ইউনিয়নের কাউলাটিয়া কবিরাজবাড়ী এলাকার এক কচুক্ষেত থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি একই গ্রামের মৃত আব্দুল গণির কন্যা। বিষয়টি নিশ্চিত গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. দিদারুল ইসলাম। তিনি জানান, ধারণা করা হচ্ছে কলাগাছের ডাউগা দিয়ে গলা ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। নিহতের মা রাবেয়া খাতুন জানান, তার মেয়ে ৩টার দিকে বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। তার মানসিক সমস্যা ছিল। তাকে কেন এভাবে হত্যা করা হয়েছে জানিনা। এ ঘটনার বিচার চাই। ”

সুতরাং, ময়মনসিংহে উদ্ধার হওয়া এই মৃতদেহটি হিন্দু নারীর শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Firoz Shai’s Facebook Post
- Media reports on the incident