গত ২১ জুলাই রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি এফ-৭ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এখন অবধি অন্তত ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়। এছাড়াও আহত ও দগ্ধ হয়েছে অন্তত শতাধিক, যাদের বেশিরভাগই শিশু শিক্ষার্থী। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে, নিহত শিক্ষার্থীদের তালিকা দাবিতে একটি ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ছবি দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
এক্সে প্রচারিত ছবি দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত ছবি দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ইউটিউবে প্রচারিত ছবি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
টিকটকে প্রচারিত ছবি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নিহত শিক্ষার্থী দাবিতে প্রচারিত তালিকাটি সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুয়া এই তালিকা ছবি তৈরি করা হয়েছে।
এই বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা প্রতিষ্ঠানটির ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইটে নিহত শিক্ষার্থীদের তালিকা দাবির এই ছবির বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ছবিটি পর্যবেক্ষণে দেখা যায় এতে, যেমন – ছবিটির উপরের একটি বৃত্তাকার লোগো রয়েছে, যেখানে একটি খোলা বই, 2001, এবং এমন একটি লেখার রয়েছে যা স্বাভাবিক বাংলা ভাষায় নয়। এছাড়া, বৃত্তকার লোগোটির নিচে বাংলায় লেখা ‘মাইলস্টন কুল এন্ড কলেজ’ এবং ইংরেজিতে লেখা ‘MILESTONE SCHOOL & COLLEGE’। তালিকাটিতে ২০ জনের ছবি রয়েছে। ১০ জন ছেলে এবং ১০ জন মেয়ে। ছবির নিচে লেখা রয়েছে ‘নিহত ছাত্র ছাত্রী’।
তবে, রিউমর স্ক্যানার টিমের বিশ্লেষণে নিহত শিক্ষার্থী দাবির এই তালিকা ছবিটিতে এআই-জনিত অসঙ্গতি লক্ষ্য করা গেছে। যেমন – এক. বৃত্তকার লোগোর ভেতরে লেখাটির কোনো অর্থ নির্দেশ করেনা এবং লেখাটি স্বাভাবিক কোনো বাংলা ভাষায় নয়। দুই. বাংলায় লেখা ‘মাইলস্টন কুল এন্ড কলেজ’ লেখাটিতে ‘মাইলস্টন’, ‘কুল’ লেখা রয়েছে। তিন. তালিকাটিতে থাকা প্রত্যেক শিক্ষার্থীর মুখাবয়ব দেখতে প্রায় একই রকম। সাধারণত এআই দিয়ে তৈরি ছবির ক্ষেত্রে এমন অসামঞ্জস্যতা দেখা যায়।

বিষয়টি আরও নিশ্চিত হতে ছবিটি এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী ওয়েবসাইট সাইটইঞ্জিনে পরীক্ষা করা হয়। ওয়েবসাইটটির বিশ্লেষণে দেখা যায়, ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৭ শতাংশ।

তালিকাটির বিষয়ে আরও নিশ্চিত হতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্কুল সেকশনের প্রধান শিক্ষক খাদিজা আক্তারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, এটি নিহত শিক্ষার্থীদের তালিকা নয়। তিনি আরও বলেন, ছবিটি দেখে মনে হচ্ছে Al ছবি। একই বাচ্চার ছবি বার বার দেয়া হয়েছে।
সুতরাং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি একটি তালিকাকে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নিহত শিক্ষার্থীদের তালিকা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Rumor Scanner’s analysis.
- Sightengine.
- Statement : Khadija Akter, Milestone School and College