ইরানের হামলায় ইসরায়েলের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ধ্বংস দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার 

সাম্প্রতিক ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের প্রেক্ষিতে হাইফা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ইরানের সফল আক্রমণ শীর্ষক ক্যাপশনে ইন্টারনেটে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি সাম্প্রতিক ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ইরানের হামলায় ইসলায়েলের হাইফ শহরের কোনো স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংসের ভিডিও নয়। বরং, অন্তত ২০১৫ সাল থেকে ইন্টারনেটে বিদ্যমান একটি ভিডিও আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Crazy China Videos’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৫ সালের ১৮ নভেম্বর ‘Massive explosion at Chinese chemical plant’ শীর্ষক ক্যাপশনের একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর একটি অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির বর্ণনায় ভিডিওটির বিষয়ে বলা হয়, “চীনের ইন্টারনেট জুড়ে একটি রাসায়নিক কারখানায় বিশাল বিস্ফোরণের একটি ভিডিও ঘুরপাক খাচ্ছে। এটি কি কোনো আসল দুর্যোগ যা ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে, নাকি কোনো সিনেমার দৃশ্য?”

ভিডিওটির মন্তব্যের ঘরে কয়েকজন ভিডিওটি নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ বা চিত্রনাট্যের মতো বলে নিজেদের মতামত জানান।

Collage: Rumor Scanner

এছাড়া, ‘Ahmed Treiban’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৫ সালের ১৯ নভেম্বর প্রচারিত ‘Chinese chemical plant explosion ….’ শীর্ষক ক্যাপশনে একই ভিডিওটি পাওয়া যায়।

ভিডিওটির মন্তব্যের ঘরে এর সত্যতা সম্পর্কে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।

Collage: Rumor Scanner

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী, প্রবীণ সৈনিক এবং বৈদেশিক নীতি এবং বৃহত্তর জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় নিয়েও খবর প্রকাশ করে ‘Military.com’ এর ওয়েবসাইটে ২০১৫ সালের ২৬ নভেম্বর ‘Explosion at Chemical Plant in Zhejiang China’ শীর্ষক ক্যাপশনে একই ভিডিও পাওয়া যায়।

Screenshot: Military.com

অর্থাৎ, ভিডিওটি সাম্প্রতিক ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের অনেক বছর আগে থেকেই ইন্টারনেটে রয়েছে। যা থেকে নিশ্চিত যে ভিডিওটি চলমান ইরান ইসরায়েল সংঘাতের নয়।

তাছাড়া, ইসরায়েলের হাইফা শহরে কোনো পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে এমন কোনো তথ্য নির্ভরযোগ্য সূত্রে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, অন্তত ২০১৫ সাল থেকেই ইন্টারনেটে বিদ্যমান পুরোনো ভিডিওকে ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ইরানের হামলায় ইসরায়েলের কথিত হাইফা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ইরানের সফল আক্রমণ দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img