ঈদ উল আজহার পূর্বে নানা মূল্যমানের নতুন ব্যাংকনোট প্রকাশ করা হয় যার মধ্যে ২০ টাকা মূল্যমানের নোটও ছিল। বাজারে আগে থেকে বিদ্যমান ২০ টাকা মূল্যমানের নোটে বাগেরহাটের ঐতিহ্যবাহী ষাট গম্বুজ মসজিদের ছবি থাকলেও নতুন এই ২০ টাকা মূল্যমানের নোট সাজানো হয়েছে দিনাজপুরের কান্তজিউ মন্দির ও নওগাঁর পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের ছবি ব্যবহার করে। এরই প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল আলোচনার সৃষ্টি হয়। সম্প্রতি এরই প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি প্রচার করা হয়, “আলহামদুলিল্লাহ! সেই বিতর্কিত গভর্নর বহিষ্কার। যে ২০ টাকার নোটে মন্দিরের ছবি লাগিয়েছে।”
উল্লেখ্য যে, নতুন এই নোটে গর্ভনর আহসান হাবিব মনসুরের স্বাক্ষর রয়েছে।
অর্থাৎ, দাবি করা হয়েছে যে, ২০ টাকা মূল্যমানের নতুন নোটে মন্দিরের ছবি যোগ করায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর আহসান হাবিব মনসুরকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০ টাকা মূল্যমানের নতুন নোটে মন্দিরের ছবি যোগ করায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর আহসান হাবিব মনসুরকে বহিষ্কার বা অপসারণ করার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে কোনোরকম নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর পদে আহসান হাবিব মনসুর এখনও বহাল আছেন।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে প্রচারিত দাবিটির সপক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর পদ থেকে আহসান হাবিব মনসুরকে বহিষ্কার বা অপসারণ করা হলে তা মূলধারার গণমাধ্যমে প্রচার করা হতো। কিন্তু এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে মূলধারার গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।
পাশাপাশি, বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করলে সেখানে গভর্নর পদে আহসান হাবীব মনসুর এখনও কর্মরত আছেন বলে দেখা যায়।
এছাড়া, আলোচিত দাবিটি গত ১১ জুনে প্রচার করা হলেও এর পরবর্তী সময়ে ১০ থেকে ১৩ জুন যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে সরকারি সফর করেন যা গত ১৪ জুন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
সুতরাং, ২০ টাকা মূল্যমানের নতুন নোটে মন্দিরের ছবি যোগ করায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর আহসান হাবিব মনসুরকে বহিষ্কার বা অপসারণ করার দাবিটি মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Bangladesh Bank – Dr. Ahsan H. Mansur | Governor, Bangladesh Bank
- Bangla Tribune – গভর্নরের লন্ডন সফরে কী পেলো বাংলাদেশ
- Rumor Scanner’s analysis