সম্প্রতি, ভারতের আহমেদাবাদে দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত হওয়া বিমানের দুর্ঘটনার আগ মুহুর্তের ভেতরের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের আহমেদাবাদে বিধ্বস্ত হওয়া বিমানের নয়। প্রকৃতপক্ষে, পৃথক তিনটি পুরোনো ফুটেজকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যম যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।
ফুটেজ যাচাই ১
ভিডিওটির প্রথমাংশে দেখতে পাওয়া বিমানের জানালার ফুটেজটির বিষয়ে অনুসন্ধানে উক্ত ফুটেজের কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স সার্চের মাধ্যমে Captain Vincent Raditya নামের একটি ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ২০২৩ সালের ১৪ জুলাই প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওর শুরুর বিমানের জানালার ফুটেজের সাথে উক্ত ভিডিওর মিল রয়েছে। ভিডিওটির শিরোনাম ইংরেজিতে ভাষান্তরের মাধ্যমে জানা যায়, এটি কোনো বিমান দুর্ঘটনার দৃশ্য নয়। বরং বৃষ্টি ও বজ্রপাতের মধ্য দিয়ে বিমান চালানোর সময় এটি ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ, ভিডিওটির প্রকাশের তারিখ থেকে এটি স্পষ্টত বোঝা যাচ্ছে, এর সাথে আহমেদাবাদের বিমান দুর্ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই।
ফুটেজ যাচাই ২
আলোচিত ভিডিওটির ৫ সেকেন্ড থেকে শুরু হওয়া বিমানের অভ্যন্তরের দ্বিতীয় ফুটেজটি অনুসন্ধানে কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম Reddit-এর ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ২৯ আগস্ট প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওর দ্বিতীয় ফুটেজের সাথে উক্ত ভিডিওর মিল রয়েছে। এছাড়াও ভিডিওটির শিরোনামে এটিকে ভিন্ন আরেকটি বিমানের অভ্যন্তরীন দৃশ্য বলে দাবি করা হয়। পাশাপাশি, আহমেদাবাদের বিমান দুর্ঘটনার সাথে উক্ত ভিডিও প্রকাশের সময়ের পার্থক্য প্রায় ২ বছর। যা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে ভিডিওটির সাথে আহমেদাবাদের বিমান দুর্ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই।
ফুটেজ যাচাই ৩
আলেচিত ভিডিওটির শেষাংশের ফুটেজটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে emirates..a380 ইউজারনেমের একটি টিকটক আইডিতে ২০২৪ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটির পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির শেষের ফুটেজের হুবহু মিল রয়েছে। ভিডিওটির শিরোনামে উল্লেখ করা হয়, বৈরী আবহাওয়ার কারণে ভিডিওর বিমানটিতে ঝাঁকুনি অনুভূত হতে দেখা যাচ্ছে। এছাড়াও ভিডিওটি প্রকাশের সময়ের দিকে লক্ষ্য করলেই বোঝা যাচ্ছে এটি আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনার অনেক আগের ভিডিও। এর সাথে ওই বিমান দুর্ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই।
সুতরাং, ভিন্ন ভিন্ন তিনটি বিমানের অভ্যন্তরের পুরোনো ফুটেজ ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে যুক্ত করে আহমেদাবাদের বিমান দুর্ঘটনার আগ মুহুর্তের বিমানের ভেতরের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।
তথ্যসূত্র