সম্প্রতি, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ “সেনাবাহিনী আমাদের স্বাধীনতা সর্বভৌমত্ব রক্ষায় সদা সতর্ক পাহারাদার। কিন্তু আমাদের মবতন্ত্রে হস্তক্ষেপ করলে সেটা আমরা মেনে নেবনা৷ যদিও আমাদের আন্দোলনে এখন ৫০-১০০ মানুষ উপস্থিত হয়, এটা স্বাভাবিক ব্যাস্ততার কারণ হতে পারে, দরকার হলে পাকিস্তানপন্থী শিবিরের সহযোগিতা নিয়েই কঠিন জবাব দেওয়া হবে।” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে দৈনিক কালের কণ্ঠের লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ফটোকার্ড দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, হাসনাত আবদুল্লাহ আলোচিত মন্তব্যটি করেননি এবং উক্ত শিরোনামে দৈনিক কালের কণ্ঠও কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, হাসনাতের ভিন্ন মন্তব্য সম্বলিত কালের কণ্ঠের ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তার সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে কালের কণ্ঠের লোগো এবং এটি প্রকাশের তারিখ ২২ মে, ২০২৫ উল্লেখ পাওয়া যায়।
পরবর্তীতে কালের কণ্ঠের ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি অন্য কোনো গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিটির বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে, কালের কণ্ঠের ফেসবুক পেজে গত ২২ মে “সেনাবাহিনী আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সদা সতর্ক পাহারাদার।দেশের প্রয়োজনে, সার্বভৌমত্বের প্রয়োজনে, আমরা প্রয়োজন হলে সেনাবাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করব। কিন্তু গণতান্ত্রিক অধিকার এবং সুষ্ঠু ক্ষমতা হস্তান্তরের যে আকাঙ্ক্ষা থেকে ২০২৪-এর অভ্যুত্থান ঘটেছে, সেখানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপকে আমরা মেনে নেব না।” শীর্ষক তথ্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ফটোকার্ডের সাথে উক্ত ফটোকার্ডের শিরোনাম ব্যতিত বাকি সকল উপাদানের মিল রয়েছে। কালের কণ্ঠের মূল ফটোকার্ডটিতে ‘‘সেনাবাহিনী আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সদা সতর্ক পাহারাদার।দেশের প্রয়োজনে, সার্বভৌমত্বের প্রয়োজনে, আমরা প্রয়োজন হলে সেনাবাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করব। কিন্তু গণতান্ত্রিক অধিকার এবং সুষ্ঠু ক্ষমতা হস্তান্তরের যে আকাঙ্ক্ষা থেকে ২০২৪-এর অভ্যুত্থান ঘটেছে, সেখানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপকে আমরা মেনে নেব না।’’ শীর্ষক বাক্য থাকলেও প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে এর পরিবর্তে “সেনাবাহিনী আমাদের স্বাধীনতা সর্বভৌমত্ব রক্ষায় সদা সতর্ক পাহারাদার। কিন্তু আমাদের মবতন্ত্রে হস্তক্ষেপ করলে সেটা আমরা মেনে নেবনা৷ যদিও আমাদের আন্দোলনে এখন ৫০-১০০ মানুষ উপস্থিত হয়, এটা স্বাভাবিক ব্যাস্ততার কারণ হতে পারে, দরকার হলে পাকিস্তানপন্থী শিবিরের সহযোগিতা নিয়েই কঠিন জবাব দেওয়া হবে।” শীর্ষক বাক্য লেখা হয়েছে।
অর্থাৎ, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে কালের কণ্ঠের ফটোকার্ড সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
মূল ফটোকার্ড সম্বলিত কালের কণ্ঠের পোস্টের মন্তব্যের ঘরে পাওয়া গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত ২২ মে হাসনাত আবদুল্লাহ এক ফেসবুক পোস্টে উক্ত মন্তব্য করেন। তবে উক্ত পোস্টে তাকে আলোচিত দাবি সম্বলিত কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি।
সুতরাং, হাসনাত আবদুল্লাহ ‘আমাদের আন্দোলনে ৫০-১০০ মানুষ হয়’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে কালের কণ্ঠের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত।
তথ্যসূত্র
- Kaler Kantho: Facebook Post