বাংলাদেশে সন্ত্রাসী হামলার ভিডিও দাবিতে ভারতে সংঘর্ষের ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, বাংলাদেশে একটি বাড়িতে সন্ত্রাসীদের হামলার ভিডিও দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।  

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভারতের মধ্যপ্রদেশের সেহর জেলার দুই সম্প্রদায়ের মধ্যকার সংঘর্ষের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Lokesh Bag নামের একটি এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট থেকে গত ৭ মার্চ করা একটি পোস্টের সন্ধান পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

পোস্টটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এতে থাকা ভিডিওর শুরুর ১৭ সেকেন্ডের ফুটেজের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে। মূলত, উক্ত ভিডিওটি আলোচিত ভিডিওটির বর্ধিত সংস্করণ। এছাড়াও ভিডিওটির শিরোনাম থেকে জানা যায়, এটি মধ্যপ্রদেশের বাকতারা নামক গ্রামের ভিডিও। ভিডিওতে প্রায় ৫০০ জাতিবাদীকে একটি দলিত বসতিতে হামলা চালাতে দেখা যায় বলেও পোস্টটিতে উল্লেখ করা হয়। 

পরবর্তীতে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম Zee News এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ৭ মার্চ প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Youtube

প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায় জি নিউজের উক্ত প্রতিবেদনটি আলোচিত ভিডিওটি নিয়েই করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, মধ্যপ্রদেশের সেহর জেলার বাকতারা নামক গ্রামে বাবলেশ চৌহান নামের এক যুবকের হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে কিরার ও দলিত সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ হয়। কিরার সম্প্রদায়ের লোকজন সন্দেহ করে বাবলেশকে দলিতরা হত্যা করেছে। তাই বাবলেশ চৌহানের হত্যার প্রতিশোধ নিতে কিরার গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে দলিতদের উপর আক্রমণের অভিযোগ আনা হয়। তবে পরবর্তীতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আরেক ভারতীয় গণমাধ্যম NDTV এর ওয়েবসাইটে উক্ত ঘটনায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, অভিযুক্ত সঞ্জয় আহিরওয়ার এবং বাবলেশ চৌহান একসাথে মদ্যপান করার সময় তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এসময় ছুরিকাঘাতের ঘটনাও ঘটে। পরবর্তীতে ওই রাতেই সঞ্জয় বাবলেশের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে ভর্তি হন। কিন্তু পরদিন সকালে ওই গ্রাম থেকে বাবলেশ চৌহানের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। যাতে আঘাতের চিহ্নও লক্ষ্য করা যায়। এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সুতরাং, ভারতের মধ্যপ্রদেশের সংঘর্ষের ঘটনার ভিডিওকে বাংলাদেশের কথিত বাড়িতে সন্ত্রাসীদের হামলার ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img