পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু মন্দিরে হামলার নয়, ভিডিওটি বাংলাদেশের দিনাজপুরে মাজারে হামলার 

সম্প্রতি ‘দেখুন হিন্দুরা, বাংলার হিন্দু মন্দিরে কি হচ্ছে এবং ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখুন.’ (অনূদিত) শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে প্রচার করা হয়েছে ৷ 

উক্ত দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি পশ্চিমবঙ্গে মন্দির ভাঙার কোনো ঘটনার  নয়, বরং এটি বাংলাদেশের দিনাজপুরে মাজার ভাঙ্গার ভিডিও।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটির কিছু কী ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘II News TV’ নামক ফেসবুক পেজে ২০২৫ সালের ০১ মার্চ প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির ০১ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট ৩০ সেকেন্ড দৃশ্যের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া গেছে৷

Comparison: Rumor Scanner.

ভিডিওটির ক্যাপশনে দাবি করা হয়, ‘দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট থানার অন্তর্গত কলোনি গ্রামে ভন্ড রহিম বাবার মাজার এলাকার তৌহিদী জনতা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়। যেখানে অসামাজিক কাজ, বাবার নামে পশু জবাই, কুরআন অবমাননা,ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত সহ নানান অপকর্ম দীর্ঘদিন যাবত করে আসতেছিল।’ 

পরবর্তীতে, উক্ত পোস্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কী-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলোর ২০২৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ‘ঘোড়াঘাটে ওরস আয়োজনের প্রস্তুতির মধ্যে মাজারে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলায় তিন দিনব্যাপী ওরস আয়োজনের প্রস্তুতির মধ্যে একটি মাজারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ২৮ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) বিকেলে সীরাতে মুস্তাকিম পরিষদ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে এলাকায় লাঠিমিছিল কর্মসূচির পর এই ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

‘রহিম শাহ বাবা ভান্ডারী মাজার’ নামের এ মাজারটি উপজেলার সিংড়া ইউনিয়নের বিরাহীমপুর গুচ্ছগ্রামে অবস্থিত। (…) শুক্রবার বিকেল পাঁচটার দিকে সীরাতে মুস্তাকিম পরিষদের ব্যানারে কয়েক হাজার ‘তৌহিদি জনতা’ লাঠি হাতে মিছিল বের করেন। ওই মিছিল থেকে মাজারে ভাঙচুর ও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় মাজারের বিভিন্ন আসবাব, ঘরের টিন ও দেয়ালের ইট খুলে ফেলে হয়। সেখানে বিক্ষুব্ধ লোকজন বিভিন্ন স্লোগান দেন। তৌহিদি জনতা আগুন দিয়ে মাজারের চারপাশ ঘিরে অবস্থান নেওয়ায় সেখানে সেনাবাহিনী ও থানা-পুলিশ যেতে পারেনি।

একই বিষয়ে সেসময় দেশের মূলধারার একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদনে (,) প্রকাশিত হয়।

সুতরাং, বাংলাদেশের মাজার ভাঙ্গার ভিডিওকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মন্দির ভাঙ্গার ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img